রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এমন গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং মিনারেলস যে খাবার গুলো থেকে পাওয়া যাবে।
- বহুদিন ধরে পুষ্টিবিদগন,পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করার উপর বিশেষ জোর দিয়ে থাকলেও আমরা বিষয়টিকে খুব বেশি জোর দেয়নি।তবে,বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিষয়টি আমাদের নতুন করে ভাবাচ্ছে।
- কারণ, যেকোনো রোগ থেকে বাচতে যেমন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল থাকতে হয় তেমনি মেডিসিনের কার্রযকারীতা এবং দ্রুত রোগ থেকে আরোগ্য লাভের জন্য ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হতে হয়।
- যদিও সব ভিটামিন এবং মিনারেলস দেহের কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং খুবই অল্প পরিমানে প্রয়োজন হয়।
- তবে,আজকের পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং মিনারেলস যেগুলো আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে সেগুলোর প্রাকৃতিক এবং সহজ উৎস গুলো কোন কোন খাবার থেকে পাওয়া যাবে সে বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করব।
- নানা কারণে প্রতিদিনের খাবার থেকে যে পরিমান ভিটামিন এবং মিনারেলস পাবার কথা সে পরিমান পাওয়া যায়না বলে এদের অভাব জনিত নানা সমস্যা দেখা দেয়।
- যার,ফলে আমরা যে ভিটামিন এবং মিনারেলস গুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো হল ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ডি, ই,জিংক।
- ভিটামিন এ- এটি একটি চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন যা দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য অপরিহার্য।
ভিটামিন-এ যেমন আমাদের দৃষ্টি শক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ভিটামিন-এ এর অভাব হলে বৃক্ক, জরায়ু, মুত্রাশয়, শ্বাসনালী প্রভৃতি স্থানের আবরক কলার সুস্থতা নষ্ট হয় এবং খুব সহজেই ওই সকল স্থানে রোগ সংক্রমিত হয়। - প্রানীজ এবং উদ্ভিদ উভয় উৎস থেকে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।ভিটামিন-এ এর সবচেয়ে সহজ এবং সুলভ উৎস হচ্ছে সবুজ,হলুদ এবং কমলা বর্নের শাক,সব্জি এবং ফল।
- এছাড়া,কড লিভার ওয়েল,কলিজা,মুরগীর ডিম,গুড়া দুধ,গরুর দুধ,মিষ্টি কুমড়া,গাজর,পুদিনা পাতা,কাঠাল, পাকা আম,কলা,পেপে,থেকে আমরা খুব সহজে ভিটামিন-এ পেতে পারি।
- ভিটামিন-সি এটি একটি পানিতে দ্রবনীয় ভিটামিন এবং আন্তকোষীয় ও সংযোজক কলার অন্যতম প্রোটিন কোলাজেন গঠনে এক বিশেষ উপাদান হাইড্রকক্সিপ্রোলিন সংশ্লেশনে জরুরী।
- ভিটামিন-সি এর অভাব হলে সংযোজক কলা,পেশী এবং রক্তনালী বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- ভিটামিন-সি,দেহে জমা থাকেনা।তাই,নিয়মিত সি যুক্ত খাবার খাবার না খেলে ক্ষত নিরাময়,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় সেসাথে আয়রন,ফোলিক এসিড শোষন এবং ভিটামিন-ই এর কার্যকরীতা যথাযথ হয়না।
- সব রকমের টাটকা ফল ও সব্জিতে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়।তবে,যেকোন টক জাতীয় ফল যেমনঃআমলকি, পেয়ারা, কুল, কামরাংগা,আনারস,জাম্বুরা,লেবু এছাড়া, কাচা মরিচ,সজিনার পাতা ও বীজের অংকুরে প্রচুর ভিটামিন-সি পাওয়া যায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হল ভিটামিন-ডি।শক্তিশালী হাড়ের গঠনের জন্য এবং অন্যান্য শরীর বৃত্তীয় কাজের জন্য এই ভিটামিন অপরিহার্য।
- ভিটামিন-ডি এর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল এটি আমাদের দেহেই তৈরি হয়।নিয়মিত রোদ লাগালেই আমাদের যতটুকু প্রয়োজন তা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে চামড়ার নীচে তৈরি হয়।
- পাশাপাশি,ভিটামিন-ডি এর খাদ্য উৎস হল ডিমের কুসুম,কড লিভার ওয়েল,মাখন এবং গূড়া দুধ।
- আমাদের দেহের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হল ভিটামিন-ই।এটি একটি এন্টিওক্সিডেন্ট।
- যা,আমাদের দেহের কোষ গুলোকে ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে।ফলে, আমরা সুস্থ থাকতে পারি।
- ভিটামিন-ই এর অভাব হলে কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, প্রজনন সমস্যা এবং গর্ভপাত ও হতে পারে।
- সব রকমের উদ্ভিজ্জ তেল,গোটা শস্য,মাখন,মাংস,মাছ প্রভৃতি ভিটামিন-ই এর উৎস।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল জিংক।শরীরের প্রতিরক্ষামূলক সিস্টেম সঠিকভাবে কাজ করার জন্য এটি বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।
- গোটাশস্য,দুধ,বাদাম বিশেষ করে কাজু বাদাম,আমন্ড বা কাঠ বাদাম,ডার্ক চকোলেট,জিংকের উৎস।
লেখক:আছিয়া পারভীন আলী শম্পা
পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড
Category : Food and Nutrition
Published By Achia Pervin Ali Shampa
Published On June, 14 2020 @ 19:31
Comments Area