"ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠার উপকারিতা"
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগেরই অভ্যাস দেরি করে ঘুমানো। ফলে সকাল হয়ত অনেকেরই দেখাই হয় না। অথচ এক সময় মানুষের অভ্যাস ছিল তাড়াতাড়ি ঘুমানো আর সকাল সকাল ওঠা। বিখ্যাত মনীষী ব্রেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন বলতেন, "ভোরের মুখে সোনা রঙ থাকে।" যারা রোজ সকালে ওঠেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন এর উপকারিতা। তবে বর্তমান আমরা সকালে না উঠে নিজেদের অনেক ক্ষতিও সাধন করছি, যা হয়ত আমরা জানিই না। আসুন জেনে নেয়া যাক সকালে ঘুম থেকে ওঠার উপকারিতা।
১. নাস্তা: দিনের কাজ শুরুর জন্য সকালের নাস্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সকালে উঠে একটা স্বাস্থ্যকর নাস্তা করা অতি জরুরি কাজের মধ্যে একটি। কারণ সকালের স্বাস্থ্যকর নাস্তা আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও ভিটামিন যোগান দেয় । এবং যেকোনো কাজে ভালো পারফরমেন্সের সঙ্গে একঘেয়েমি দূর করতে সহায়তা করে। তাই ভালো একটা নাস্তার জন্য সকালে উঠুন।
২. ব্যায়াম: সকালে ঘুম থেকে ওঠার আরেকটি সুফল বয়ে আনবে ব্যায়াম। সেই সঙ্গে রাতের ঘুমও গভীর করবে ব্যায়াম। সকালে ঘুম থেকে ওঠা মানে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া। এতে ঘুম ভালো হয়। প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হলেও অভ্যাস হয়ে গেলে দেহঘড়ি ঘুমের নতুন সময় ও সকালে ওঠার বিষয়টি মানিয়ে নেবে।যারা সকালে উঠে ব্যায়াম করেন তারা সারাদিন ঝরঝরে থাকেন এবং রাতেও গভীর ঘুম উপভোগ করেন।
৩. আরামে কাজ সারা: গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কোনো ব্যক্তি ভোরে ওঠেন, তখন অন্যদের তুলনায় তিনি বেশি সক্রিয় থাকেন এবং কাজে সময় নেন কম। সকালে সময়মতো উঠে পড়লে আরামে কাজগুলো শেষ করতে পারা যায়। অফিসে যাওয়ার সময়ও থাকবে যথেষ্ট। ফলে সেখানে সময়মতো পৌঁছতেও পেরেশানি হতে হবে না আপনাকে। সকালে উঠলে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যখন কেউ সকালে ওঠেন, তখন কাজের তাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যায়।
৪. পড়াশুনা: ভোরে ঘুম থেকে উঠলে আপনি ফ্রেস মনে পড়াশুনায় সময় দিতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এক গবেষণায় দেখেছেন, যারা সকালে ঘুম থেকে ওঠেন, তারা দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো ফল করে।
৫. আরো উৎপাদনশীল: সকালে ঘুম থেকে উঠলে আপনার কাজের গতি বেড়ে যাবে। আপনি হয়ে উঠবেন আরো উৎপাদনশীল। তাই দুপুরের লাঞ্চের সময় দেখবেন আপনি যথেষ্ট কাজ সেরে ফেলেছেন এবং তা দেখেই আপনার উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে যাবে। তাই ঘুম থেকে সকালে উঠুন।
৬. বিশুদ্ধ বায়ু: সারাদিন মানুষের চলাফেরা ও কলকারখানা খুলা থাকে বলে দিনে বাতাসে প্রচুর রোগ-জীবানু থাকে। কিন্তু ভোরের বায়ু থাকে বিশুদ্ধ। ফলে আপনি নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় বিশুদ্ধ বায়ু শরীরের ভেতরে নিতে পারছেন।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ভোরে ঘুম ভাঙে, তারা বেশি সুখী হন। এই সুখ স্বল্পমেয়াদি নয়, বরং সারাটা জীবন ধরেই সুখ ছুঁয়ে যায়। তাই আমাদের সকলের সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করা উচিত।
Comments Area