প্রথমবার গর্ভধারণ যে কোনো নারীর জীবনে পরম আকাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। এসময় প্রসূতি নারীদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। যদিও গর্ভধারণ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তবে সামান্য অস্বাভাবিকতা বা অসচেতনতা মা ও অনাগত সন্তানের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই এ সময় সব ধরনের ঝুঁকি এড়াতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া এবং কিছু সাবধানতা জরুরি; যেমন —

• গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ধনুষ্টংকার, পোলিওসহ বিভিন্ন রোগের টিকা গ্রহণ করতে হবে।
• গর্ভাবস্থার দিনগুলোর হিসাব রাখা জরুরী। গর্ভাবস্থা ৩টি ভাগে বিভক্ত যেমন ৩+৩+৩=৯ মাস। প্রথম তিন মাসে হরমোনগত পরিবর্তন, বিপাকীয় পরিবর্তন, রক্তাচাপ জনিত সমস্যা ইত্যাদি হতে পারে। এসব উপসর্গ নিরসনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্বাবধানে থেকে উপযুক্ত চিকিৎসা,পুষ্টিকর খাবার এবং বিশেষ যত্নের ব্যবস্থা করতে হবে।
• গর্ভাবস্থায় ওজন স্বাভাবিক আছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে। গর্ভাবস্থায় ওজন কত হওয়া দরকার তা নির্ভর করে গর্ভধারণের পুর্ববর্তী ওজনের উপর। ওজন যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয় তাহলে অল্প পরিমাণে ক্যালরি ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করতে হবে। আর ওজন অল্প হলে দেহে যেন ভিটামিন, মিনারেল এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি না হয় সেইদিকে খেয়াল রাখুন।
• সঠিক পরিমাণের খাবার খাওয়া শিশুর পুষ্টির জন্য জরুরি। শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, ডিম খাওয়ার পাশাপাশি সারা দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত খাবারও কখনো কখনো ক্ষতির কারণ হতে পারে।
• পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
• হবু মায়ের পর্যাপ্ত বিশ্রামও চাই। তাই রাতে আট ঘণ্টা এবং সম্ভব হলে দুপুরে দুই ঘণ্টা বিশ্রাম নিন।
• গর্ভাবস্থায় কোনো ধরনের সমস্যা হলে জরুরি ভিত্তিতে কোন চিকিৎসা কেন্দ্রে যাবেন, কীভাবে যাবেন, কোথায় প্রসব করাবেন—আগেই ভেবে রাখুন।
• নিজের রক্তের গ্রুপ জেনে রাখুন এবং জরুরি পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে রক্ত দিতে পারে এমন কয়েকজনকে প্রস্তুত রাখতে পারেন।

প্রথমবার গর্ভবতী মায়েরা প্রায়শই সন্তানের সুবিধার জন্য গর্ভাবস্থায় কি করবেন এবং কি করবেন না তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন। এই টিপসগুলি মাথায় রাখলে কিছুটা নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। তবে যে কোন বিভ্রান্তির ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যেতে কখনও দ্বিধা করবেন না।

লেখকঃ সুরাইয়া ফেরদৌস