জাতীয় ফল কাঠালের পুষ্টি গুন
- গ্রীষ্মকাল মানেই নানা রসালো পাকা এবং মিষ্টি স্বাদের ফলের অপূর্ব সমাহার।গ্রীষ্মকালে যে ফল গুলো পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে অধিকাংশ ফলই মিষ্টি স্বাদের।
- সেই মিষ্টি ফলের মধ্যে অন্যতম একটি ফল হল আমাদের জাতীয় ফল কাঠাল।কাঠাল এমন একটি পুষ্টিকর ফল যাতে অন্য অনেক ফলের তুলনায় ভিটামিন-এ, ভিটামিন সি, ফাইবার, নিয়াসিন, ম্যাগনেশিয়াম,পটাশিয়াম অনেক বেশি পরিমান রয়েছে।
- প্রতি ১০০ গ্রাম কাঠালে ক্যালরি রয়েছে ৯৪,ফ্যাট ০.৩ মিঃগ্রাঃ, ডায়াটারি ফাইবার ২ গ্রাম,প্রোটিন ১ গ্রাম,শর্করা ২৪ গ্রাম,ক্যালসিয়াম ৩৪ মিঃগ্রাম,ফোলেট রয়েছে ১৪ মাইক্রোগ্রাম এবং আয়রন রয়েছে ০.৬ গ্রাম।
- কাঠাল হলুদ বর্নের কারণ হল এতে ক্যারোটিনয়েডের উপস্থিতি।ক্যারোটিনয়েড হল এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এটি অন্যান্য সকল এন্টিঅক্সিডেন্টের মতই বিভিন্ন রোগ যেমনঃ হার্টের সমস্যা,ক্যান্সার এবং চোখের নানা সমস্যা যেমনঃ ক্যাটার্যাক্টস এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের মত রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- কাঠাল এমন একটি ফল যার খোসা,বীচি কোন কিছুই ফেলনা নয়। কাচা অবস্থায় সব্জি হিসাবে রান্না করে খাওয়া যায়।পাকা অবস্থায় পুষ্টিকর ফল হিসাবে অনন্য।
- বিশেষ করে,শিশু কিশোরদের রাতকানা এবং অন্যান্য অপুষ্টি দূর করার জন্য কাঠাল অতুলনীয়।
- যারা,অপুষ্টিতে ভুগছেন তারা নিয়মিত কাঠালের বীচি খেতে পারেন।এটি প্রোটিনের বেশ ভাল উৎস।
- কাঠাল এমন একটি ফল যাতে দ্রবনীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের ডায়াটারি ফাইবার রয়েছে।যা,আমাদের অন্ত্রের অবস্থা ভাল রাখতে সহায়তা করে এবং আমাদের হজম শক্তিকে উন্নত করে।ফলে,যাদের প্রায়ই কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজমের সমস্যা হয় তারা এই সময়ে পরিমিত পরিমানে কাঠাল খেলে বিশেষ ভাবে উপকৃত হবেন।
- কাঠালে বেশ ভাল পরিমাণে কপার রয়েছে যা আমাদের থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।সুতরাং,যাদের থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে তারা থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য কাঠাল খেতে পারেন।
- যারা,দ্রুত বুড়িয়ে যেতে চাননা তারা এসময়ে খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কাঠাল রাখতে পারেন।বুড়িয়ে যাবার মূল কারন হল ফ্রি-র্যাডিকেল।
- যা,আমাদের দেহের কোষ ড্যামেজ করার মাধ্যমে এজিং প্রসেসকে দ্রুত করে। অপর দিকে কাঠালে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট এই সব ফ্রি র্যাডিক্যালকে অকার্যকর করার মাধ্যমে আমাদের এজিং প্রসেসকে ধীর করে দেয়।
- কাঠালে থাকা পটাশিয়াম দেহের সোডিয়ামের পরিমাণ রেগুলেট করার মাধ্যমে আমাদের হার্টের ড্যামেজ প্রতিহত করে।ফলে,হার্ট থাকে সুস্থ।
- যাদের পরিবারিক ক্যান্সারের ইতিহাস রয়েছ তারা এসময়ে খাদ্য তালিকায় কাঠাল রাখতে পারেন কারণ কাঠালে থাকা ফাইটোকেমিক্যালস, এন্টিএক্সিডন্টে এবং ফ্লাভোনয়েডস ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- কাঠালে থাকা উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন-এ (বিটা ক্যারোটিন) চোখের ভিসন উন্নত করতে ও চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে বিশেষ করে চোখের ভাইরাল এবং ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন প্রতিহত করার মাধ্যমে চোখ কে সুস্থ রাখে।
সতর্কতাঃ
কাঠালের নানান পুষ্টি গুন থাকা সত্ত্বেও একবারে বেশি পরিমান কাঠাল খেলে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের রক্তের শর্করা বেড়ে গিয়ে বিপত্তি ঘটতে পারে এবং গ্যাস বা বদ হজম ও হতে পারে।এছাড়া,যাদের দেহে ইউরিক এসিড বেশি তারা কাঠাল বা কাঠালের বীচি খেলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।সুতরাং,কাঠালের সঠিক উপকারীতা পেতে চাইলে অবশ্যয় পরিমিত পরিমানে খেতে হবে।
লেখক:আছিয়া পারভীন আলী শম্পা
পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড
Category : Health, Beauty, Skin, Food and Nutrition
Published By Achia Pervin Ali Shampa
Published On July, 05 2020 @ 21:26
Comments Area