গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা: কারণ ও প্রতিকার
গর্ভাবস্থায় মায়েদের বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্যজনিত জটিলতা দেখা দেয়। তার মধ্যে অন্যতম একটি শারীরিক অসুস্থতা হলো রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা যা সচরাচর অ্যানিমিয়া নামে পরিচিত। রক্তে রক্তকণিকার অভাব অর্থাৎ অক্সিজেনবাহী হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা হলে অ্যানিমিয়া দেখা দেয় দেখা দেয়। বাংলাদেশে প্রায় ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ নারী গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতায় ভুগে থাকে।
গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা কেন হয়?
গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন কারণে রক্তস্বল্পতা হতে পারে। যেমন -
- আয়রনসমৃদ্ধ খাবার, এবং আমিষ জাতীয় খাবার কম খেলে।
- শরীরে ভিটামিন বি১২/ ফলিক অ্যাসিডের অভাব হলে।
- গর্ভকালীন সময়ে রক্তক্ষরণ হলে।
- দুই বা ততোধিক সন্তান গর্ভে ধারণ করলে
- খুব কম বয়সে গর্ভধারণ করলে,
- গর্ভধারণ করার আগ থেকেই রক্তশূন্যতা থাকলে।
- তৃতীয় বিশ্বে গুঁড়ো কৃমির কারনেও রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। প্রতিটি কৃমি একদিনে ০.২৫ মিলি লিটার পর্যন্ত রক্ত শোষণ করতে পারে।
- সংক্রমণ বা ইনফেকশনের কারণে, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা এমনকি মূত্রথলির সংক্রমণের কারণেও রোগী রক্তস্বল্পতায় ভুগতে পারে।
প্রতিকার ও করণীয়ঃ
গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা প্রতিকারে নিম্নোক্ত উপায়গুলো মেনে চলুন —
- গর্ভধারণের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান টেষ্ট করে জেনে নিতে হবে।
- গর্ভকালীন সময়ে আমিষ, ভিটামিন ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার যেমন কলিজা, মাংস, ডিম, সবুজ শাকসবজি, মটরশুঁটি, শিম বা যেকোনো বিচি, কলা, পেয়ারা ইত্যাদি বেশি করে খেতে হবে।
- টক ফল এবং ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হবে।
- পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ও ভিটামিন ট্যাবলেট বা সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে।
- শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়মিত চেক-আপ এবং প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার করে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করাতে হবে।
একটি সুস্থ শিশুর জন্মের জন্য প্রধান শর্ত হলো মায়ের পূর্ণ সুস্থতা। তাই গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতা থাকলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিত্সা নিশ্চিত করতে হবে।
লেখকঃ সুরাইয়া ফেরদৌস