করোনা থেকে আমরা যেভাবে নিরাপদ থাকতে পারি
করোনা থেকে আমরা যেভাবে নিরাপদ থাকতে পারি। জেনে নিন।।।
করোনা ভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগ “কোভিড ১৯” থেকে রক্ষা পাবার জন্য আপাতত সচেতনতা এবং পরিষ্কার পরিছন্নতার কোন বিকল্প নেই।
কারণ এখন পর্যন্ত এই ভাইরাস দমনের জন্য কোন ভ্যাকসিন বা মেডিসিন আবিষ্কার হয়নি।যদিও বর্তমানে করোনাকে ঘিরে নানারকম তত্ত্ব বা মিথ বেরিয়েছে যার সব গুলো সত্যি নয়।তাই,আতংকিত না হয়ে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করুন।
মনে রাখতে হবে,এই ভাইরাসটি মানুষের দেহ কোষের ভেতরে মিউটেড করছে অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করছে।যার ফলে এটি আরো বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠছে।
“নোভেল করোনা”ভাইরাস এমন এক সংক্রামক ভাইরাস যা এর আগে কখনো মানব দেহে সংক্রামক হয়নি।এই ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশি কিংবা সংস্পর্শ থেকে যেকোন সুস্থ মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।
এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের যে বিশেষত্ব দেখা দিচ্ছে তা হল এই ভাইরাসের কারণে রেস্পিরেটরি ডিস্ট্রেস অনেক বেশি হচ্ছে এবং অনেক বেশি মানুষ ভেন্টিলেটরে যাচ্ছে এবং রেস্পিরেটরি ডিস্ট্রেস এ মারা যাচ্ছেন।
করোনা একটি রেস্পিরেটরি প্যাথজেন যেটা আপার রেস্পিরেটরি ট্রাক দিয়ে “ড্রপ্লেট ইনফেকশন” হিসাবে দেহে প্রবেশ করে।
এই রোগের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর ঠাণ্ডা এবং কাশি।সাধারণত জ্বর এবং শুকনো কাশি দিয়ে এটি শুরু হয়।জ্বর এবং কাশি হবার এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।এই ভাইরাসটি শরীরে প্রকাশ পেতে ১৪ দিনের মত সময় লাগে।
পরিবারের কেউ সর্দি কাশিতে বা জ্বরে আক্রান্ত হলে তাকে পৃথক রাখার চেষ্টা করুন।এই রকম অবস্থায় কোন রকম সময় ক্ষেপণ বা অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব নিশ্চিত হবার জন্য হট লাইনে ফোন করে রক্তের নমুনা নিতে আসার জন্য বলুন।
ঘরে এসে মেডিকেল টিম নমুনা নিয়ে গেলে অন্তত সব দিক দিয়েই নিরাপদ থাকা সম্ভব।
নিয়মিত জীবানুনাশক দিয়ে ঘরবাড়ি,বাথরুম ঘরের কার্পেট,বিছানা এবং পর্দা পরিষ্কার করুন।পাশাপাশি,রুম এবং বাথরুমের দরজার হাতল সমূহ অন্তত দিনে দুই বার জীবানুনাশক দিয়ে মুছে ফেলুন।
নিয়মিত টয়লেট পরিষ্কার রাখুন।নিয়মিত সাবান দিয়ে অন্তত ৩০-৪০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুয়ে ফেলুন।
মনে রাখবেন গরম আসলে যে করোনা আর ছড়াবে না এমন তথ্যের ভিত্তি নেই।উচ্চ তাপমাত্রায় ও এটি টিকে থাকতে পারে।
টাকা হাতে নেবার পর ভালভাবে হাত না ধুয়ে,মুখ বা নাকে হাত দেয়া কিংবা কোন কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।কারণ এটি নোটের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
বাইরে রাস্তার তৈরি যেকোন খাবার খাওয়া একেবারে বাদ দিন।যারা রাস্তার পাশে খাবার তৈরি করেন তাদের পরিষ্কার পরিছন্নতার ব্যাপারে যেমন উদাসিনিতা রয়েছে তেমনি ফুড হাইজিন যে শূন্যের কোঠায় এতে কার কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়।মনে রাখবেন,আক্রান্ত ব্যক্তির থুথু কাশি এবং বিভিন্ন জিনিসে সংস্পর্শ থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়।তাই,রাস্তার পাশে এইসব খাবার মোটেও নিরাপদ নয়।
এছাড়া,আপাতত বাড়ির বাইরে রেস্টুরেন্ট বা হোটেলে বসে
“নোভেল করোনা” ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য অধিক জামায়েত হয় এমন কোন অনুষ্ঠান বা প্রোগ্রাম,গন পরিবহণ,এবং খুব বেশি প্রয়োজন না থাকলে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।বাসে যদি চড়তে হয় তবে মাস্ক ব্যবহার করুন।
বর্তমান পরিস্থিতে সম্ভব হলে বিদেশে বেড়াতে যাওয়া এবং বিদেশ থেকে দেশে আসা পরিহার করুন।
কারো সাথে দেখা হলে হ্যান্ডশেক বা কোলাকুলি করা থেকে বিরত থাকুন।
এসময় কাঁচা বা অর্ধ সিদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।ঘরে তৈরি ভালভাবে সিদ্ধ করা খাবার গ্রহণ করুন।
মাছ মুরগী কাটার পর সব কিছু ভালভাবে জীবানু নাশক এবং গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।হাত ভাল ভাবে পরিষ্কার না করে অন্য কিছুতে হাত লাগাবেন না।এবং মাছ মাংস খুব ভাল ভাবে সিদ্ধ করে রান্না করুন।
হাঁচি বা কাশি দেবার সময় হাতের পরিবর্তে কনুই ব্যবহার করুন।
বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর প্রথমেই ভালভাবে পরিষ্কার হয়ে নিন এরপর অন্য কাজ করুন।
বাড়িতে শিশু,বয়স্ক এবং গর্ভবতী মহিলা থাকলে তাদের উপর বিশেষ নজর।
নিজের হাঁচি কাশি বা নাক পরিষ্কার করা টিস্যু রাস্তায় বা যেখানে সেখানে ফেলবেন না।
ঠাণ্ডা কাশি বা জ্বর হলে অফিস বা ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
এসময় বাসায় তৈরি স্বাস্থ্য সম্মত খাবার গ্রহণ করুন।অন্তত ১০-১২ গ্লাস পরিষ্কার পানি এবং সেসাথে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল বেশি করে খাদ্য তালিকায় রাখুন।
করোনা বিষয়ক যেকোন তথ্যে বা নমুনা সংগ্রহের জন্য আইইডিসিয়ার এর হট লাইন ০১৯৪৪৩৩৩২২২ কল করুন।
***লেখকঃআছিয়া পারভীন আলী শম্পা
পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মা লিমিটেড***
Category : Health
Published By Ismat Ara Shama
Published On February, 10 2021 @ 11:52
Comments Area