করোনা ঠেকাতে কেবল হাতের নয় প্রয়োজন পায়ের ও পরিস্কার পরিছন্নতা
- করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই সংক্রমণ ঠেকাতে বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে বলা হলেও পা থেকেও কিন্তু করোনার সংক্রমণ হতে পারে।
- কারণ,আমাদের পা খুব সহজেই সবচেয়ে বেশি ধূলো-বালির সংস্পর্শে আসে।
- আমরা যখন হাটাহাটি করি পায়ে খুব সহজে নোংরা বা ময়লা লাগে।এই ময়লা ধূলোর মধ্যেই থাকতে পারে করোনা ভাইরাসের জীবাণু।
কারণ,যেখানে সেখানে থুতু বা কফ ফেলা আমাদের পুরনো দিনের অভ্যাস। - যা,পায়ের মাধ্যমে আমাদের ঘরে প্রবেশ করতে পারে এবং পরবর্তীতে যেকোনো ভাবে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
পায়ে,ময়লা লাগলে বড় জোর আমরা পানি দিয়ে পা ধুয়ে ফেলি।এই পা নিয়েই আবার আমরা বিছানা,ছোফা সব জায়গায় বিচরণ করি।বিষয়টি হয়তো আমরা খেয়ালই করিনা। - একদিকে বার বার হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলার কাজটি বেশ ভালভাবে করলেও পায়ের পরিস্কার পরিছন্নতার ব্যাপারে খুব কম মানুষই সচেতন।
- এই,অসচেতনতা থেকেও কিন্তু করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তবে, পায়ের যত্ন যে কেবল করোনা ঠেকাতে প্রয়োজন তা নয় একজন মানুষের সার্বিক সুস্থতার জন্য ও জরুরী।
- তাই,পায়ের পরিস্কার পরিছন্নতার ব্যাপারে আজকে থাকবে কিছু গাইড লাইন-
- করোনাকালীন সময়ে,চামড়ার জুতা এড়িয়ে চলাই ভাল। প্লাস্টিকের জুতা বা ওয়াশেবল জুতা পরা সব চাইতে ভাল। এটি সহজে সহজেই ধুয়ে নেওয়া যায়।
পায়ে চামড়ার জুতার পরিবর্তে প্লাস্টিকের ফুল কাভার করা জুতা এবং জুতার ভেতরে সুতি মোজা পরা উচিত।কারণ,প্লাস্টিকের জুতা পরিস্কার করা কিংবা জীবানুমুক্ত করা দুটোই সহজ। - বর্তমান সময়ে দরজায় পাশেই একটি জায়গায় সাবান পানি এবং স্যানিটাইজার রেখে দেয়া উচিত।বাইরে থেকে ফিরে এসে প্রথমেই হাত স্যানিটাইজ করার পর সাবান পানিতে সেই জুতা পরিস্কার করে ঘরে প্রবেশ করতে করা উচিত।
- যে জুতা পরে বাইরে যাওয়া হবে সেটি পরিস্কার করে আলাদা ভাবেই ঘরের বাইরে কোন জুতার র্যাকে সংরক্ষণ করা উচিত।
- যেহেতু, বর্তমানে বর্ষাকাল তাই অনেকের পায়েই ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে।এছাড়া,বর্ষাকালে ছত্রাকের সংক্রমণ ছাড়াও হাজা, সেপসিস, সেলুলাইটিসের সমস্যাও দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে সবসময় পা শুকনো ও পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করতে হবে।
- বিশেষ করে ওজু এবং গোসল করার পর পা এবং আঙুলের মাঝে পরিস্কার সুতি কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।আঙুলের খাঁজে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করতে হবে বাইরে বের হবার আগে।
- কোন কোন ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে পায়ে ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
- বিশেষ করে যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস রয়েছে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় কম।তাই,তাঁদের ক্ষেত্রেও পায়ের বিষয়ে করোনা সংক্রমণের সময় আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত।
- এছাড়া,যদি কারো পায়ে কোথাও কেটে যায় সেখানে ব্যান্ডেজ লাগানো বাধ্যতামূলক। কাটা অংশ থেকে যাতে কোন রকম সংক্রমণ না ছড়ায় সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
- আমাদের মাঝে অনেকেরই পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যা থাকে যা বেশ কষ্টকর।তবে একটু সচেতন হলে এই সমস্যা থেকে খুব সহজেই ভাল থাকা যায়।বিশেষ করে গোসলের সময় পায়ের গোড়ালি ভেজা অবস্থায় প্রতিদিন আলতো করে পামিস স্টোন বা কিছুটা শক্ত কিছু দিয়ে ঘষে নেয়া ভাল।
- রাতে ঘুমানোর আগে পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে শুয়ে থাকলে ওভেই সমস্যা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।
এছাড়া,সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন কুসুম গরম পানিতে সামান্য লবণ এবং শ্যাম্পু গুলিয়ে সেই পানিতে ১৫-২০ মিনিট দুই পা ভিজিয়ে রেখে পা ভাল ভাবে ঘষে গোসল করে নিতে হবে। - পরে পা ভাল করে শুকিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।এতে পায়ের অনেক ধরনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
- বর্তমান সময়ে যে কোনও সংক্রমণ এড়াতে বাড়িতে হোক কিংবা বাড়ির বাইরে, পায়ে সুতির মোজা পরে থাকা যেতে পারে।এতে পায়ে ধুলোবালিও কম লাগবে।
- প্রতিদিনের পরিহিত মোজাও নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। বাইরে থেকে পরে আসা মোজা না ধুয়ে কোনও ভাবেই দ্বিতীয় বার ব্যবহার করা যাবে না।
- আমরা ওয়াশরুমে সবাই একই স্যান্ডেল ব্যবহার করে থাকি।তাই ওয়াশ রুম ব্যবহার করার পর হাতের পাশাপাশি পা সাবান পানিতে ধুয়ে বাইরে বের হওয়া উচিত।
- এছাড়া,বিছানায় শোবার আগেও পা খুব ভালভাবে সাবান পানিতে ধুয়ে এরপর হাত ও সাবান পানিতে ধুয়ে ফেলা হলেও অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
সেসাথে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাচতে হাত কিছুক্ষণ পর পর সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে ফেলা,বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা,ভীড় এড়িয়ে চলার বিষয়টি সব সময় মেনে চলতে হবে।
লেখক:আছিয়া পারভীন আলী শম্পা
পুষ্টিবিদ, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
Category : Health, Beauty, Skin, Diseases
Published By Achia Pervin Ali Shampa
Published On July, 28 2020 @ 09:51
Comments Area